Breaking News

কিছু কর্মকর্তাই ডুবাচ্ছে ইউজিসিকে

ইত্তেফাক রিপোর্ট

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি বাণিজ্য, নিয়োগে তদ্বির, কমিশনের গোপনীয় সিদ্ধান্ত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে সরবরাহ, টাকার বিনিময়ে বিভাগ অনুমোদনসহ নানা অনিয়মে ইউজিসির কর্মকর্তাদের একটি অংশ জড়িত। কেউ এককভাবে আবার কেউ সিন্ডিকেট তৈরি এসব অনিয়মের সাথে জড়িত রয়েছে বলে খোদ ইউজিসির একাধিক কর্মকর্তা জড়িত রয়েছে।

সম্প্রতি ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) রিপোর্টেও এর সত্যতা তুলে ধরা হয়েছে। ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, নানা অনিয়মের সাথে ইউজিসির কিছু কর্মকর্তা জড়িত। সমস্যা জিইয়ে রেখে আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করে ইউজিসির কিছু কর্মকর্তা।

বেশি অনিয়মে জড়িত বেসরকারি ও সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখায় কিছু কর্মকর্তা। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার কর্মকর্তারা বিভিন্ন সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে জনবল অনুমোদনের ক্ষেত্রে আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করে থাকে। আবার কোনো কোনো কর্মকর্তা এর বিনিময়ে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরির সুযোগ করে নেয় স্বজনদের।

সমপ্রতি কুমিল্লার ব্রিটানিয়া কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) অতিরিক্ত পরিচালক ফেরদৌস জামানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

'টিআইবির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়: সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়' শীর্ষক প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ধরে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন কর্তৃক সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে এ সংক্রান্ত প্রেরিত ছক অনুযায়ী তথ্য প্রেরণের জন্য অনুরোধ জানানো হয়। সে আলোকে মোতাবেক ব্রিটানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করে ইউজিসির অতিরিক্ত পরিচালক (পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়) ফেরদৌস জামান তাদের কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা ঘুষ নিয়েছেন। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে ইতিমধ্যে ফেরদৌস জামানকে কমিশনের চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে ইউজিসি কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. আতফুল হাই শিবলীকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়।

সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার চেয়ে বেশি অনিয়ম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখায়। এই শাখার কিছু কর্মকর্তা নানা অনিয়মের সাথে জড়িত।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক উপাচার্য ইউজিসির এক কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করে বলেন, তিনি বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে টাকার বিনিময়ে চাকরি দেন। শিক্ষার্থীদের সাথে অলিখিত চুক্তির মাধমে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে টিউশনি ফি কমিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করে। কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে ছাত্রকে দরিদ্র উল্লেখ করে তার টিউশন ফি শতভাগ মওকুফ করেন। এর বিনিময়ে শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ৬০ শতাংশ ছাড়ে টাকা নিয়ে নেয়।

ইউজিসির এক কর্মকর্তা বলেন, বর্তমানে অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে নানা অনিয়ম রয়েছে। রয়েছে ট্রাস্টি বোর্ডের মধ্যে দ্বন্দ্ব। অনেক বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ক্যাম্পাস পরিচালনা করছে। এ সব বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু কর্মকর্তা কাজ করছে। এ কারণে এ সব বিশ্ববিদ্যালয়েল বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছে না ইউজিসি।

ইউজিসির কর্মকর্তারা বলছেন, দেশের সব প্রতিষ্ঠানে বদলির নিয়ম থাকলেও ইউজিসির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার কর্মকর্তাদের কোন বদলি নেই। কোনো অনিয়ম থাকলেও তাদের বদলি করা হচ্ছে না।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনেকে উচ্চ শিক্ষা কমিশন গঠনের আইন তৈরির উদ্যোগের এই সময় কিছু কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এ সব অনিয়মের অভিযোগ বিপাকে ফেলেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে (ইউজিসি)।

http://www.ittefaq.com.bd/index.php?ref=MjBfMDdfMjNfMTRfMF8wXzNfMTQ3OTc2
ইঅ/চৌফে/শ৪১১/০৯:০২পিএম

No comments