Breaking News

ইউজিসির ৬ কর্মকর্তা বদলির সিদ্ধান্ত

যুগান্তর রিপোর্ট
প্রকাশ : ১০ জুলাই, ২০১৪

দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) ৬ কর্মকর্তাকে বদলির সিদ্ধান্ত হয়েছে। এসব কর্মকর্তা বর্তমানে সংস্থাটির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখায় কর্মরত। তাদের এ শাখা থেকে অন্যত্র বদলি করা হবে। সিন্ডিকেটভুক্ত হয়ে দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ ওঠায় তাদের বিরুদ্ধে এ ধরনের ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে কমিশন। সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

এদিকে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) গবেষণা প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ইউজিসি ৩০ জুন যে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে, তারা বুধবার পর্যন্ত পুরোদমে কার্যক্রম শুরু করেনি। এ ব্যাপারে ইউজিসির অভ্যন্তরীণ সিন্ডিকেটের অসহযোগিতা ভূমিকা রাখছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রমে ঘাটে ঘাটে দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগের ব্যাপারে ইউজিসি কর্তৃপক্ষ এ কমিটি গঠন করেছিল।

বুধবার যুগান্তরে বেসরকারি খাতের উচ্চ শিক্ষায় সংঘটিত বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে প্যাকেজ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এ নিয়ে সৃষ্টি হয় তোলপাড়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ইউজিসি এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় জগতে এই প্যাকেজ প্রতিবেদন ছিল বুধবারের প্রধান আলোচ্য বিষয়। সূত্র নিশ্চিত করেছে, যুগান্তরের এসব প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ইউজিসির সিন্ডিকেটের ৬ জনের বিরুদ্ধে উল্লিখিত পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়। তবে বুধবার বিকাল পর্যন্ত এ ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। বরং এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত সচিব এএস মাহমুদ জানান, বিষয়টি তারা মন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের নজরে নিতে পারেননি।

ইউজিসি সূত্র জানায়, বুধবার দিনের শুরুতেই ইউজিসি চেয়ারম্যান (প্রতিমন্ত্রী) অধ্যাপক ড. একে আজাদ চৌধুরী ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্য অধ্যাপক ড. আতফুল হাই শিবলি বৈঠক করেন। এরপর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার কিছু কর্মকর্তাকে নিয়ে এবং ইউজিসির তিন সদস্যকে নিয়ে চেয়ারম্যান আরও দুটি বৈঠক করেন। দফায় দফায় এ মিটিং চলে বিকাল ৩টা পর্যন্ত। শেষের এ বৈঠকেই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সন্দেহভাজন ও চিহ্নিত ৬ কর্মকর্তাকে সরিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। তবে টিআইবির অভিযোগ তদন্তে গঠিত কমিটির প্রতিবেদন দাখিলের পর এ সিদ্ধান্তটি বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, এছাড়া যুগান্তরে প্রকাশিত প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার জন্য ইউজিসি চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটিকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে ইউজিসির পক্ষ থেকে পেপার কাটিং আনুষ্ঠানিকভাবে একজন উপসচিবের মাধ্যমে ইউজিসি কমিটির কাছে পাঠিয়েছে।
সূত্র আরও জানায়, বুধবার যুগান্তরের প্রতিবেদনে যে ছয়জনের নাম এসেছে, দিনভর আলোচনার শীর্ষে ছিলেন তারা। ইউজিসির শীর্ষ এক কর্মকর্তা এদের বিশেষ করে ডক্টর উপাধিধারী জনৈক কর্মকর্তাকে বাঁচানোর নানা চেষ্টা তদবির করছেন। এর বাইরে এই ৬ জন সংঘবদ্ধ হয়ে দুপুরে চেয়ারম্যানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যান। তবে চেয়ারম্যান তাদের সাক্ষাৎ দেননি বলে জানা গেছে।


ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. একে আজাদ চৌধুরী যুগান্তরকে জানান, মানসম্মত উচ্চ শিক্ষার স্বার্থে সব ধরনের প্রতিবন্ধকতা দূর করে সরকার এগিয়ে যেতে চায়। এ ক্ষেত্রে ইউজিসির ভেতরে কেউ থাকলে তারা পার পাবে না। তিনি বলেন, তদন্ত কমিটি কাজ করছে। যে কোনো অভিযোগ তাদের খতিয়ে দেখার ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর এ ব্যাপারে ইউজিসি পদক্ষেপ নেবে।

No comments